শাক আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। আমাদের দেশে বিভিন্ন রকমের শাক পাওয়া যায়। এর মধ্যে ঢেঁকি শাক হলো অন্যতম। শাকটির বৈজ্ঞানিক নাম: Diplatinum esculent। এটি Athyriaceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ প্রজাতি।
এটি একটি ফার্ণ বর্গীয় গাছ। এই ফার্ণটি সাধারণত সম্ভবত সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয়। অনেকে একে ঢেঁকিয়া শাক বা বউ শাক নামেও ডেকে থাকেন। সুস্বাদু এই শাকটি কিন্তু অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং এটি মানবদেহের জন্য ভীষণ উপকারী।
ঢেঁকি শাক বাংলাদেশের উত্তর বঙ্গের মানুষের একটি প্রিয় খাদ্য। স্যাঁতসেঁতে ছায়াময় এলাকাসমূহ এবং জঙ্গলে এর দেখা মেলে। সারা বছর চুপসে থাকলেও বর্ষার মৌসুমে ঢেঁকিশাক বেশ তরতাজা হয়ে উঠে।
এবার চলুন জেনে নিই ঢেঁকি শাকের ঔষধিগুণ সম্পর্কে।
(১) ঢেঁকি শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও সি থাকে। ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে এই শাক খেলে দাঁতের ক্ষত বা ক্যাভিটি দূর হয়। ভিটামিন এ আমাদের চোখের দৃষ্টি বাড়াতে সাহায্য করে। একইসঙ্গে এটি আমাদের ত্বক ভালো রাখতে সহায়তা করে। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।(২) ঢেঁকি শাক পটাসিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও এতে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকায় ঢেঁকি শাক অস্টিওপোরেসিস এবং অন্যান্য ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত রোগের ঝুঁকি কমায়।
(৩) ঢেঁকি শাক আমাদের ফুসফুসের ক্যান্সার, ত্বকের ক্যান্সার ও গর্ভ ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এটি আমাদের রক্তনালীর সংকোচন প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।
(৪) ঢেঁকি শাক আমাদের শ্বাসতন্ত্রকে সতেজ রাখে। একইসঙ্গে এটি পুরনো কাঁশি সারিয়ে তুলতে খুবই কার্যকর। এই শাক আমাদের কাঁটা ছেড়া কিংবা ঘায়ের ক্ষত সাড়িয়ে তোলে।
(৫) ঢেঁকি শাকে উচ্চমাত্রায় ফসফরাস থাকায় এটি ‘রিকেট’ সারাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এতে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন আমাদের ক্ষুধামন্দা দূর করে। ডায়বেটিক রোগীর জন্য ঢেঁকি শাক খুবই ভালো খাবার।
(৬) ঢেঁকি শাক আমাদের বিভিন্ন রকমের ব্যাথা, লিভার ইনফেকশন এবং ছোঁয়াচে ঠাণ্ডা-কাঁশি থেকে রক্ষা করে।