চালতা (Elephant Apple) একটি ফল যা বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর। চালতার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রকারের ভিটামিন, খনিজ, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতার সাথে যুক্ত।যদিও চালতার কিছু উপাদান শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে, কিন্তু সরাসরি জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষেত্রে চালতার ভূমিকা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ক্যান্সার প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেখানে প্রচুর পরিমাণে ফল ও সবজি খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বজায় রাখা প্রয়োজন।
চালতা |
গ্রাম বাংলার একটি অতি পরিচিত টকজাতীয় ফল হল চালতা। এর বৈজ্ঞানিক নাম Dillenia indica এবং ইংরেজি নাম Elephant Apple। চালতা একটি চিরহরিৎ বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ, যা মাঝির আকারের। এটি সাধারণত চাটনি ও আচারের জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও এটি উদ্যানে শোভাবর্ধক তরু হিসেবেও লাগানো হয়।
চালতা গাছ উচ্চতায় পর্যন্ত ১৫ মিটার পর্যন্ত বা তারও বেশি উচ্চ হতে পারে। গাছের গায়ে লালচে রঙের চকচকে বাকল থাকে এবং পাতার কিনারা খাঁজ কাটা, শিরা উঁচু এবং সমান্তরাল। চালতার ফুল সাদা রঙের এবং সুগন্ধযুক্ত, যেটি প্রচুর হলুদ পুংকেশর দেখা যায়। ফুলে ৫টি মোটা পাঁপড়ি বেষ্টিত কেন্দ্রে প্রচুর হলুদ পুংকেশর থাকে; এবং বৃতিগুলো সেসব পাঁপড়িকে আঁকড়ে ঘিরে রাখে। এই ফুলের ব্যাস ১৫-১৮ সেন্টিমিটার। ফুলের মৌসুম মে-জুন।
চালতা গাছে দারুণ ঔষধি গুণাবলী রয়েছে। এটি ক্যালসিয়াম, শর্করা, আমিষ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান ধারণ করে, এর ফলে এটি রোগ প্রতিরোধে এবং পুষ্টি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ ছাড়াও, এটিতে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, থায়ামিন এবং রিবোফ্লাবিন পাওয়া যায়।
চালতার ঔষুধি গুণাবলী
চালতা খুবই পুষ্টিগত ও সুস্বাদু খাবার। এটি ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ এর এক উৎকৃষ্ট উৎস। চালতার পরিমাণিত প্রোডাক্ট থেকে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ পাওয়া যায়।
চালতার অস্ত্রোচ্ছেদনশীল বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জীবাণুগুলি রয়েছে, যা জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। চালতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকার জন্যে এই ফল স্কার্ভি ও লিভারের রোগ-প্রতিরোধে সাহায্য করে।
চালতায় রয়েছে অনেক আঁশ, যা বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমে প্রভাব ফেলে এবং পেটের সমস্যাগুলির মোকাবেলায় সাহায্য করে।
চালতায় থাকা আয়রন রক্তের লোহিতকণিকার কার্যক্রমে সহায়তা করে। এটি আমাদের রক্তের সংবহন ঠিক রাখে এবং রক্তের বিভিন্ন সমস্যাগুলির মোকাবেলায় সাহায্য করে।
চালতা কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়াও ঠান্ডা ও কাশির জন্য পাকা চালতার রস চিনি মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
চালতা কিডনির নানা রোগ-প্রতিরোধে সাহায্য করে।
চালতা গাছের ছাল গুঁড়া করে খেলে কফ ও সর্দি ভালো হয়। গলা ব্যথা, জ্বর, কফ, সর্দি প্রতিরোধে চালতার আছে এক অনন্য গুণ।
চালতা খুবই পুষ্টিগত ও গুণগ্রাহী খাবার। তাই স্বাস্থ্য প্রসারে এবং রোগ প্রতিরোধে চালতা খাবারের গুরুত্ব অনেক বেশি।